ঢাকা,বুধবার, ২ জুলাই ২০২৫

চকরিয়া পাবলিক লাইব্রেরি দুই বছর ধরে বন্ধ

নিজস্ব প্রতিনিধি, চকরিয়া :: গত দুইবছর ধরে বন্ধ রয়েছে চকরিয়া উপজেলার একমাত্র পাবলিক লাইব্রেরিটি। ভবনটির সামনের পথটি বৃষ্টি ও গাছের পাতায় পড়ে স্যাঁতসেঁতে অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। এরইমধ্যে লাইব্রেরির বেশির ভাগ বই বিভিন্ন পোকা মাকড়ে খেয়ে নষ্ট করে ফেলেছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অযত্নে অবহেলায় লাইব্রেরিটি পরিত্যাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে বলে জানিয়েছেন সচেতনমহল ও বইপ্রেমিরা।

জানা যায়, চকরিয়া উপজেলা সিনিয়র জুড়িসিয়াল ম্যাজিস্টেট আদালতের দক্ষিণ পাশে এই পাবলিক লাইব্রেরির অবস্থান। দুই পাশে ও পিছনে রয়েছে সরকারি নানা প্রতিষ্ঠান। আশপাশে রয়েছে কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সবকিছু মিলিয়ে গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় পাবলিক লাইব্রেরিটির অবস্থান হলেও গত দুইবছর ধরে নানা অজুহাতে বন্ধ রয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। লাইব্র্রেরিটিতে কোরআনের তরজমা-তাফসির, শিশুদের বিভিন্ন বই, ইসলামি ডিকশনারি, উপন্যাস, রাজনীতি, আইন ও শিক্ষামূলক অসংখ্য বই রয়েছে।
একসময় বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী ও বই প্রেমিদের আনাগোনায় ভরপুর ছিলো লাইব্রেরিটি। বর্তমানে চকরিয়া উপজেলার একমাত্র পাবলিক লাইব্রেরিটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বইপ্রেমিরা বঞ্চিত হচ্ছে বইপড়া থেকে। তাছাড়া তরুণ প্রজন্ম বই পড়ায় একবারেই বিমুখ হয়ে পড়ছে। মূলত তারা মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেটে নানা গেইমে আসক্ত হয়ে পড়েছে। বই পড়ার পরিবর্তে জড়িয়ে পড়ছে অসামাজিক কার্যকলাপে। বই প্রেমিদের প্রাণের দাবী চকরিয়া পাবলিক লাইব্রেরিটি যেন পুনরায় চালু করা হয়। বই পাঠকের কলকাকলিতে মুখরিত হয়ে উঠবে পাবলিক লাইব্রেরিটি এই প্রত্যাশা তাদের।
সচেতন মহল মনে করেন, বইয়ের প্রতি মানুষের আগ্রহ বৃদ্ধি এবং পাঠাভ্যাস গড়ে তোলার মাধ্যমে আলোকিত মানব সমাজ গড়ে উঠে। সমাজে সৃজনশীলতার অভাবে একশ্রেণির তরুণ প্রজন্ম বিপথগামী হয়ে পড়েছে। তাদেরকে সমাজের মূলধারায় ফিরে আনতে লাইব্রেরির বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে একটি উপজেলার একমাত্র পাবলিক লাইব্রেরিটি বন্ধ থাকার বিষয়টি দুঃখজনক।
চকরিয়া উপজেলা ছাত্র প্রতিনিধি মোবারক হোসেন জিহান, শিক্ষার্থী মুবিনুল ইসলাম জানায়-পাবলিক লাইব্রেরির প্রায় ৫০০ গজ উত্তরে চকরিয়া সিটি কলেজ, পাশে চকরিয়া কেন্দ্রীয় উচ্চ বিদ্যালয় সহ অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এছাড়াও পৌর এলাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, নানা পেশার মানুষ গণগ্রন্থাগারে নিয়মিত বই বড়তে আসতো। বর্তমানে গণগ্রন্থাগার বন্ধ থাকায় তারা জ্ঞানার্জন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ছাত্র, তরুণ ও যুব সমাজ মোবাইল গেইম এবং ইন্টারনেটে আসক্ত তাই তাদের এ পথ থেকে ফেরাতে পাবলিক লাইব্রেরি চালু করা প্রয়োজন। তারা আরও বলেন, উপজেলায় ১৮টি ইউনিয়ন একটি পৌরসভা নিয়ে চকরিয়া উপজেলা গঠিত। বিশাল এই জনগোষ্ঠীর স্বার্থে দ্রæত পাবলিক লাইব্রেরি পূণরায় চালু করার দাবী।
জানা যায়, ২০২৩ সালে পাবলিক লাইব্রেরিটি বন্ধ হওয়ার আগে প্রতিদিন অসংখ্য বই প্রেমিদের ভিড় থাকতো। বর্তমানে লাইব্রেরি ভিতরে ঢেউ টিন ও পাইপ সহ আসবাবপত্র রাখা রয়েছে। গত দুইবছরে এই লাইব্রেরিটির উন্নয়ন ও চালুর বিষয়ে কোনও উদ্যোগই দেখা যায়নি বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)  মোহাম্মদ আতিকুর রহমান চকরিয়া নিউজকে জানান, তিনি আসার আগে থেকেই পাবলিক লাইব্রেরিটি বন্ধ রয়েছে। আবারো চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। লাইব্রেরিটির ভেতরে বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। পথটিও সংস্কার করতে হবে। আগামী তিন চার মাসের মধ্যে সচল করা হবে বলে জানান তিনি।

পাঠকের মতামত: